মুক্তিযুদ্ধের আগে শুরু করে সম্প্রতিকালের বাংলাদেশে এসে শেস হয়েছে এই উপন্যাস। সময়ের পরিমাপে বিশার ক্যানভাসে দেশের সামগ্রিক পটভূমিতে মফস্বলের এক শহর, সেখানকার কিছু মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, নির্যাতন-অবমাননা এবং এর মধ্যে বেঁচে থাকার করুণ ও দুঃসাহসিক প্রচেষ্টা কাহিনীকে দিয়েছে মহাকাব্যিক বিস্তার। হিংসা, লোভ, নৃশংসতা, বর্বরতার পাশাপাশি সহমর্মিতা, বন্ধুত্ব এবং প্রেম-ভালোবাসার মিশ্রণে ইতিহাসের কয়েকটি পূর্ব প্রাণবন্ত হয়েছে রক্ত-মাংসের আদলে যার জন্য এই উপন্যাসকে বলা যায় সেই সময়ের বিশ্বস্ত দলিল। এখানে মুক্তিযুদ্ধ সময়ের এবং উত্তর-স্বাধীনতা পর্বের যে চিত্র পাওয়া যায় তা সংক্ষিপ্ততার মধ্যেই সৃষ্টি করে এমন মানবিক আবেদন যা হৃদয়কে স্পর্শ করে এবং বুদ্ধিবৃত্তিকে নাড়া দিয়ে যায়। সময়ের বিশাল ব্যাপ্তিতে কাহিনীকে যা ঐক্য সূত্রের মতো বেঁধে রেখেছে তা তিন প্রধান চরিত্র, তিন বন্ধুর সম্পর্ক। এই সম্পর্কের পরিণতিতে ট্র্যাজেডি যেমন আছে সেই সঙ্গে আছে ধ্বংস ও মৃত্যুকে অতিক্রম করে ভালোবাসার ও প্রীতির চিরন্তন আশ্বাস। হতাশা, বিশ্বাসঘাতকতা এবং ব্যর্থতার মধ্যেও উপন্যাসটি তাই হয়ে ওঠে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাবাদী এক উচ্চারণ।
About This Books