কোনো বইয়ের ভূমিকা লেখা আনন্দের ব্যাপার। এক মাসেরও বেশি হল সংশপ্তকের দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকা লেখার চেষ্টা করছি কিন্তু কলম কিছুতেই এগোয় না। বত্রিশ মাস পরেও প্রায়ই হাত টেলিফোনের দিকে এগিয়ে যায় শহীদুল্লাহ মামাকে এ ব্যাপারে একটু জিজ্ঞাসা করে নি। আপনিই আবার হাতটা সঙ্কুচিত হয়ে আসে। শহীদুল্লাহ কায়সারের অসাধারণ সজীব মন ও তীক্ষ মনন শক্তির উপর নিশ্চিন্ত নির্ভরতার ঘোর এখনও আমি কাটিয়ে উঠতে পারিনি। শহীদুল্লাহ কায়সারকে প্রথম আমি দেখি ১৯৪০ সালে কলকাতায় হলওয়েল মনুমেন্ট’ বিরোধী আন্দোলনের সময়ে। হেয়ার স্কুলে এ সম্পর্কে ছাত্রদের একটি সভা হচ্ছিল। প্রেসিডেন্সি কলেজের তরফ থেকে আমি সভায় উপস্থিত। বাচ্চা একটি ছেলের বক্তৃতার ভাষা ও যুক্তির সাবলীলতায় আকৃষ্ট হ’য়ে নাম জিজ্ঞাসা করায় জবাব পেলাম, “শহীদুল্লাহ, মাদ্রাসা আলিয়ার ছাত্র।” চমৎকৃত হয়েছিলাম। সিরাজউদ্দৌল্লার কলঙ্ক অপনোদনের আন্দোলনে ফজলুল হক সাহেবের মুসলিম লীগ, প্রজা পার্টি কোয়ালিশন সরকারের বিরুদ্ধে মুসলমান ছাত্রদের নামাতে হিমসিম খেতে হচ্ছিল, সে পটভূমিকায়, মাদ্রাসার একজন ছাত্রের মুখে এরূপ জ্বালাময়ী বক্তৃতাচমৎকৃত হওয়ার ব্যাপার ছিল বৈকি।
About This Books