কিশোর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘য়ুরোপ প্রবাসীর পত্র’ একটি ভ্রমণ কাহিনী। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বহুমুখী সাহিত্য প্রতিভার এটি একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। মাত্র সতেরো বছর বয়স্ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ইউরোপ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সম্বলিত ১০টি পত্র দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পাদিত ‘ভারতী’ পত্রিকায় ‘য়ূরোপযাত্রী কোনো বঙ্গীয় যুবকের পত্র’ শিরোনামে ধারাবাহিকভাবে বৈশাখ ১২৮৬ বঙ্গাব্দ থেকে মোট চৌদ্দ সংখ্যায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। মূলতঃ কিশোর বয়সে মেজদাদা সত্যেন্দ্রনাথের সাথে বিলেতে ভ্রমণের সময় নতুন পরিবেশে নতুন দেশ নতুন জীব বৈচিত্রের সাথে নিজেকে অভিযোজিত করতে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ যে সব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন তারই বর্ণনা ও প্রতিফলন রয়েছে এই দশটি পত্রে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঠিক কখন এই পত্রগুলো রচনা শুরু করেন এবং ঠিক কখন শেষ করেন তার সঠিক তথ্য জানা যায় না। তবে রবীন্দ্র জীবনীকার প্রশান্ত কুমার পালের মতে এই লেখাটির সূচনা হয়েছিল জাহাজে থাকতেই আর শেষ হয়েছিল ব্রাইটনে পৌঁছাবার পর। ১৮৮১ সালে বিলেত থেকে ফেরার পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই পত্রগুলিকে য়ুরোপ প্রবাসীর পত্র নামে গ্রন্থবদ্ধ করে প্রকাশ করেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত ‘পাশ্চাত্য ভ্রমণ’ গ্রন্থের প্রথম খন্ডে একটি গ্রন্থবদ্ধ হয় এবং দ্বিতীয় পত্রে গ্রন্থিত হয় ‘য়ুরোপ যাত্রীর ডায়ারি’ (১৮৯১)। ‘য়ুরোপ প্রবাসীর পত্র’ গ্রন্থের পটভূমি সম্পর্কে প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় বলেছেন: রবীন্দ্রনাথের বয়স এখন সতেরো বৎসর পাঁচ মাস, আমেদাবাদে মাস চার ও বোম্বাইয়ে মাস দুই কাটাইয়া তিনি বিলেতে চলিলেন, সঙ্গে মেজদাদা সত্যেন্দ্রনাথ ফার্লো লইয়া ইংলন্ডে যাইতেছেন, তাহার স্ত্রী পুত্র কন্যা ইতিপূর্বে বিলাতে গিয়াছেন।
About This Books