ব্যাপারটা শুরু হয়েছিল এভাবে । চন্দ্রা নদী তীর ভাঙতে ভাঙতে এগিয়ে এসে পলাশপুর গ্রামের বড় হিজল গাছটা পর্যন্ত এসে হঠাৎ করে থেমে গেল । হিজল গাছটার অর্ধেক তখন শূন্যে নদীর কালো পানির উপর ঝুলছে, বাকি অর্ধেক কোনভাবে মাটি কামড়ে আটকে আছে—দেখে মনে হয় যে-কোনমুহূর্তে পুরো গাছটা বুঝি পানিতে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে । এই গাছটা ছিল পলাশপুর গ্রামের বাচ্চাকাচ্চাদের সবচেয়ে প্রিয় গাছ । তারা এর মোটা ডাল বেয়ে উপরে উঠত, মাঝারি ডালগুলোতে ঘোড়ার মতো চেপে বসে দুলত, সরু ডালগুলো ধরে ঝুল খেয়ে নিচে লাফিয়ে নামত । নদীর ভাঙনের মাঝে পড়ে যাওয়ায় প্রথম প্রথম বাচ্চারা কেউ এই গাছে উঠতে সাহস করত না । এক-দুই দিন যাবার পর গ্রামের দুর্দান্ত আর ডানপিটে কয়েকজন একটু একটু করে গাছটায় আবার ওঠা শুরু করল, কিন্তু ঠিক তখন জমিলা বুড়ি একদিন নদীর তীরে দাঁড়িয়ে হিজল গাছটা নিয়ে তার বিখ্যাত ভবিষ্যদ্বাণীটা ঘোষণা করল । তারপর আর কাউকে হিজল গাছের ধারেকাছে দেখা যায়নি ।
About This Books