About This Books

বুবুনের বাবা

বুবুনের বাবা

  • Author: মুহম্মদ জাফর ইকবাল
  • Publisher: জ্ঞানকোষ প্রকাশনী
  • Category: উপন্যাস
  • ISBN: 9789849277057
0 Review

যে সুটকেসটা বুবুন আর আম্মা মিলে টেনে নাড়াতে পারেনি জাহিদ চাচা সেটা এক হাতে তুলে একেবারে বাসার দরজার সামনে রেখে দিলেন। জাহিদ চাচার শরীরে মনে হয় মোষের মতো জোর । যাদের শরীরে মোষের মতো জোর হয় তাদের চেহারায় একটা গুণ্ড-গুণ্ডা ভাব থাকে, কিন্তু জাহিদ চাচার বেলায় সেটা সত্যি না । তার চেহারাটা একেবারেই ভালোমানুষের মতো । ফরসা গায়ের রং চুল সুন্দর করে আঁচড়ানো চোখে কালো ফ্রেমের চশমা । কথা বলেন সুন্দর করে আর যখন হাসেন তখন মনে হয় তাঁর এত আনন্দ হচ্ছে যে সেই আনন্দে চোখ দুটি বুজে আছে । বুবুন মানুষজনের বেলায় খুব খুঁতখুতে, কিন্তু এই মানুষটাকে তার বেশ পছন্দ হল । জাহিদ চাচা পকেট থেকে একটা চাবি বের করে দরজার তালা খুলে আম্মাকে বললেন, “ডক্টর রওশান, এই হচ্ছে আপনার নতুন বাসা ।” আম্মা ভিতরে ঢুকে বললেন, “বাহ্!” বুবুন বুঝতে পারল বাসাটা আম্মার পছন্দ হয়েছে । পছন্দ না হলে আম্মা চুপচাপ থাকতেন আর জিজ্ঞেস করলে বলতেন, “হুশ! বেশ ভালোই তো মনে হচ্ছে।” জাহিদ চাচা ভারী সুটকেসটা আবার এক হাতে টেনে ঘরের ভিতরে ঢুকিয়ে ফেলে বললেন, “বাসাটা ভালো, আপনাদের পছন্দ হবে । একটু ছোট, তবে—” আম্মা বললেন, “ছোট কোথায়? দুজন মানুষের জন্য ঠিকই আছে। ময়লা করার জন্যে বুবুনের যথেষ্ট জায়গা আছে। এইখানে সে তার নোংরা কাপড় ফেলবে, ঐখানে কমিক। এইখানে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করে আগুন ধরাবে, এইখানে চিউয়িংগাম চিবিয়ে ফেলে রাখবে, এইখানে চশমা হারাবে । ঐখানে— আম্মার কথা শুনে জাহিদ চাচা চোখ ছোট ছোট করে আবার হা হা করে হেসে উঠলেন যেন খুব একটা মজার কথা শুনেছেন । বুবুনের দিকে তাকিয়ে বললেন, “তাই নাকি ইয়ংম্যান?” বুবুন কিছু বলার আগেই আম্মা বললেন, “আসলে নাম দেওয়া উচিত ছিল। বেবুন—”

Summary

Tab Article

যে সুটকেসটা বুবুন আর আম্মা মিলে টেনে নাড়াতে পারেনি জাহিদ চাচা সেটা এক হাতে তুলে একেবারে বাসার দরজার সামনে রেখে দিলেন। জাহিদ চাচার শরীরে মনে হয় মোষের মতো জোর । যাদের শরীরে মোষের মতো জোর হয় তাদের চেহারায় একটা গুণ্ড-গুণ্ডা ভাব থাকে, কিন্তু জাহিদ চাচার বেলায় সেটা সত্যি না । তার চেহারাটা একেবারেই ভালোমানুষের মতো । ফরসা গায়ের রং চুল সুন্দর করে আঁচড়ানো চোখে কালো ফ্রেমের চশমা । কথা বলেন সুন্দর করে আর যখন হাসেন তখন মনে হয় তাঁর এত আনন্দ হচ্ছে যে সেই আনন্দে চোখ দুটি বুজে আছে । বুবুন মানুষজনের বেলায় খুব খুঁতখুতে, কিন্তু এই মানুষটাকে তার বেশ পছন্দ হল । জাহিদ চাচা পকেট থেকে একটা চাবি বের করে দরজার তালা খুলে আম্মাকে বললেন, “ডক্টর রওশান, এই হচ্ছে আপনার নতুন বাসা ।” আম্মা ভিতরে ঢুকে বললেন, “বাহ্!” বুবুন বুঝতে পারল বাসাটা আম্মার পছন্দ হয়েছে । পছন্দ না হলে আম্মা চুপচাপ থাকতেন আর জিজ্ঞেস করলে বলতেন, “হুশ! বেশ ভালোই তো মনে হচ্ছে।” জাহিদ চাচা ভারী সুটকেসটা আবার এক হাতে টেনে ঘরের ভিতরে ঢুকিয়ে ফেলে বললেন, “বাসাটা ভালো, আপনাদের পছন্দ হবে । একটু ছোট, তবে—” আম্মা বললেন, “ছোট কোথায়? দুজন মানুষের জন্য ঠিকই আছে। ময়লা করার জন্যে বুবুনের যথেষ্ট জায়গা আছে। এইখানে সে তার নোংরা কাপড় ফেলবে, ঐখানে কমিক। এইখানে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করে আগুন ধরাবে, এইখানে চিউয়িংগাম চিবিয়ে ফেলে রাখবে, এইখানে চশমা হারাবে । ঐখানে— আম্মার কথা শুনে জাহিদ চাচা চোখ ছোট ছোট করে আবার হা হা করে হেসে উঠলেন যেন খুব একটা মজার কথা শুনেছেন । বুবুনের দিকে তাকিয়ে বললেন, “তাই নাকি ইয়ংম্যান?” বুবুন কিছু বলার আগেই আম্মা বললেন, “আসলে নাম দেওয়া উচিত ছিল। বেবুন—”

Related Books